নির্বাচন নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচল Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




নির্বাচন নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচল

নির্বাচন নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচল




আলম রায়হান
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বলতে গেলে প্রায় দোরগোড়ায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন হলেও সাধারণ মানুষ সেটিকে তেমন ধর্তব্যের মধ্যে নেয়নি। ফলে মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে তৈরি হয়েছে এবার। তাদের বিবেচনায় ভোট হচ্ছে ১০ বছর পর। যে কারণে এবারের ভোট নিয়ে জনগণের এত আগ্রহ। সঙ্গে আছে ভয়ানক আশঙ্কাও!

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার দোলাচল ছিল বেশ কয়েক বছর ধরেই। এ ব্যাপারে রাজনীতি বেশ গুমোটও হয়ে গিয়েছিল। বিরক্তিকর এ দশা হঠাৎ কেটে যায় নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। বিএনপি প্রভাবিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিরিজ সংলাপ ছিল হাঁসফাঁস গরমে হঠাৎ এক পশলা ভারি বর্ষণের মতো প্রশান্তির বিষয়। এর আগে দেশবাসী ছিল একরকম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সরকারের মেয়াদ যতই কমে আসছিল দেশের মানুষ ততই নিমজ্জিত হচ্ছিল নানান আশঙ্কায়। এ আশঙ্কা থেকে দেশবাসীকে অনেকটা দেবদূতের মতো মুক্তি দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত উদ্যোগ ও দৃঢ়তার কারণে রাজনীতির গুমোট আকাশে দেখা গেল অসংখ্য শুভ্র মেঘের আনাগোনা। কিন্তু সে আকাশ কি আবার কালো মেঘে ঢেকে যাবে? আলামত কিন্তু সে রকমই বলে মনে করছেন কেউ কেউ! নির্বাচনী প্রচারণায় সংঘাত-সংঘর্ষ-প্রাণহানি অন্যরকম বার্তা দিচ্ছে। সাধারণভাবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, শেষতক প্রত্যাশিত মাত্রার নির্বাচন হবে তো? নাকি এবারও হবে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার আনুষ্ঠানিকতা স্টেজ রিহার্সেল! আর তাও করা যাবে কিনা তা নিয়ে কারও কারও বেশ সংশয় আছে জামায়াতে ইসলামীর লবিস্ট নিয়োগের খবর ফাঁস হওয়ার পর।
সব মিলিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে শঙ্কা কেবল সাধারণ মানুষের নয়, এ ধরনের কথা প্রধান দুই পক্ষ থেকেও বার বার বলা হচ্ছে শুরু থেকেই। আওয়ামী লীগ বলছে বিএনপি নির্বাচন নস্যাৎ করতে চায়। একই অভিযোগ বিএনপির প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।

কেবল নির্বাচন গণতন্ত্রের ইন্ডিকেটর নয়, তা সত্য। তেমনই এও ঠিক, নির্বাচন না থাকলে আর যাই হোক তা গণতন্ত্র হয় না। যে কারণে নির্বাচন একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণতন্ত্র রক্ষায় একমাত্র বিষয় বললেও হয়তো বেশি বলা হবে না; বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে। এদিকে ভোট দেওয়ার বিষয়টি আমাদের দেশের মানুষ অধিকার এবং একই সঙ্গে মর্যাদার বিষয় বলে বিবেচনা করে। ফলে নির্বাচন হুমকির মুখে পড়লেই নানান রকমের আশঙ্কা চেপে বসে সব মহলে। এমনই আশঙ্কা ঘনীভূত হয়েছে সম্প্রতি। আর এটি কেবল কল্পনাপ্রসূত আশঙ্কা নয়। বরং বহুলশ্রুত বিষয়। নির্বাচনের দুটি প্রধান পক্ষ এ আশঙ্কার কথা প্রচার করছে। কারও কারও মতে অবশ্য এটি করা হচ্ছে বিরুদ্ধ পক্ষকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে। তবে এই দোষারোপের ধারা একে অন্যকে ঘায়েল করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তা মন্দের ভালো বলে বিবেচনা করলেও করা যায়। কিন্তু এর সঙ্গে এও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, নির্বাচন নস্যাৎ করার বিষয়ে দুই পক্ষের দোষারোপের ধারা গল্পের কুয়ায় ব্যাঙের প্রতি দুরন্ত কিশোর দলের ঢিল ছোড়ার মতো খেলা। কিন্তু গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণের জন্য বিষয়টি হচ্ছে কুয়ার ব্যাঙের জীবন-মরণের প্রশ্ন। এ কারণে নানান টানাপোড়েন সত্ত্বেও নির্বাচন নিয়ে অন্তরে আশার আলো জ্বালিয়ে রাখে দেশের মানুষ। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোর প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু এ আলো কখন নিভে যায় তা-ই হচ্ছে দুশ্চিন্তার বিষয়। এ দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক ঘটনা-প্রবাহ। বিরোধী দল-জোটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর হঠাৎ সংলাপ আয়োজনের প্রভাবে জন আশঙ্কার পারদ ১০০ থেকে প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নেমে গিয়েছিল। কিন্তু সেই আশঙ্কার পারদ আবার ঊর্র্ধ্বমুখী। অনেকেই সন্দেহ করতে শুরু করেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষতক ভোট গ্রহণের দিন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে তো!

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর নানান ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের মাধ্যমে টানা ১০ বছরে শেখ হাসিনার সরকার দেশ চালাচ্ছে। এ সময় দেশ যে উচ্চতায় পৌঁছে গেছে তা বিশ্বে গর্ব করার মতো বিষয়। কিন্তু একটি দেশের অকল্পনীয় এ অগ্রগতি আর ১০টা দেশের মর্মপীড়ার কারণ হবে না, তা নিশ্চিতভাবে মনে করার কোনো কারণ নেই। স্বাধীনতার পর নানান ইনডেক্সে পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে ম্যাজিক গতিতে। আবার গত পাঁচ বছরে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রতিবেশী বিশাল ভারতের অনেক ইনডেক্সকে ছাড়িয়ে গেছে। এ সময় তথাকথিত দাতা সংস্থা নামের সুদের কারবারি বিশ্বব্যাংকসহ অনেক শক্তি বেশ নাখোশ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত মাতব্বরি করতে না পারার কারণে। পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনেক দেশের অবাঞ্ছিত খবরদারি মোটেই পাত্তা দেয়নি বাংলাদেশ। যে দৃঢ়তা ধারণ করা কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের এ দৃঢ়তা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বপ্ন ছোঁয়ার অগ্রগতি নিশ্চয়ই কোনো কোনো বিশ্ব মোড়লের বিরক্তির উদ্রেক করে থাকতে পারে। এরাও কিন্তু লেজ ধরে নাড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এ ছাড়া ঘরের শত্রু বিভীষণ তো আছেই!

বিরাজমান বাস্তবতায় নির্বাচন নিয়ে নানান মহলের আশঙ্কা মোটেই ফেলনা নয়। আর আশঙ্কার ঘটনাই যদি শেষ পর্যন্ত ঘটে তাহলে আশার আলো নিভে যাবে। তখন কেবলই থাকবে নিকষ অন্ধকার। তবে এ ক্ষেত্রে সেইফটিক্লজের মতো ভরসা হচ্ছে, দশম সংসদ বিরাজমান থাকা। ফলে চাইলেই ষড়যন্ত্রকারীরা সহজে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করতে পারবে না। মহাসংকট সৃষ্টি হলে এটিই হচ্ছে প্রধান ভরসা। কিন্তু ফুল ছেঁড়ার নিষেধ থাকাকে বিদ্রুপ করে কেউ ফুল গাছই উপড়ে ফেলার দাম্ভিকতায় আক্রান্ত হতে পারে। বিকারগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা তো রাজনীতিতে একেবারে কম নয়!

লেখক : আলম রায়হান, লেখক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD